প্রথম আলো-সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের হেডলাইন হলো ব্লগার অভিজিত রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আসলেই কি তিনি শুধু ব্লগার? অবশ্য বাংলানিউজ আর বিডিনিউজে পরিচয় দিয়েছে লেখক অভিজিত রায় হিসেবে।
আসলে মিডিয়া পাবলিককে খাওয়ানোও মতো করে নিউজ প্রেজেন্ট করে যাতে পাবলিক হেডলাইন পড়ার পর বাকীটা পড়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে নিউজের হেডলাইনে ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলাতে খুব সহজে বেশীর ভাগ পাঠকই ধরে নিবে লোকটা নাস্তিক হবে। অতএব, দুই-একটা নাস্তিক মারা দেশ ও জাতির জন্য সুসংবাদ।
গত দু'বছর হেফাজতের নিউজ করতে করতে মিডিয়া এখন ব্লগার মানেই নাস্তিক এমন একটা নেগেটিভ সেন্স তৈরী করে ফেলেছে (এর মানে আমি বলছি না অভিজিত রায় নাস্তিক ছিলেন না)। অনেকের কাছেই নাস্তিক হত্যা কতটুকু হালাল সেটা কেউ বোঝার দরকার পড়বে না। বরং ব্লগারদের গালাগাল করে একচোট দেখে নিবে। ব্যাপার এমন, একটা দুইটা নাস্তিক ধরো, ধইরা ধইরা জবাই করো!
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা বা ব্লগার পরিচয়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাবে অভিজিত রায়ের লেখক পরিচয়। মানুষ জানবে সে শুধু ধর্মের বিরুদ্ধে বিশেষত ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে লিখেছে। এ নিয়ে কাল থেকে বাঁশের কেল্লা বা রেডিও মুন্না টাইপের পেইজগুলো থেকে হয়তো প্রচার প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে নাস্তেক জালেম অভিজিত রায়কে নিয়ে। মানে বিজ্ঞান নিয়েও যে মানুষটা লিখতো সে হয়ে যাবে ১০০% দেশের শত্রু। অতএব হত্যাকারীরা বাহবা পাবে।
এক্সট্রিম লেভেলের যে কোন কিছুই খারাপ। মুক্তমনার মুখোশে ইসলাম ধর্ম বা অন্য ধর্মকে খোঁচা মেরে লেখা। আবার ধর্মান্ধ সেজে যাকে তাকে ধর্মের শত্রু বলে খতম করা। তাই বলে ভিন্ন মত সহ্য না করে একদম খতম করা, গুম করে দেয়া আসলে কোন সংস্কৃতি হতে পারে না।
আরেকটা জিনিস চোখে লাগলো যেটা হলো ফেব্রুয়ারীতেই এসব নাস্তিক বা নাস্তিকতার দায়ে অভিযুক্ত লোকগুলোকে টার্গেট করে হামলা করা হয়! দু বছর আগে ফেব্রুয়ারীতেই রাজীব হায়দারকে হত্যা করা হলো, ২০০৪-এর ২৭ ফেব্রুয়ারীতে হুমায়ন আজাদকে বইমেলা প্রাঙ্গনের বাইরে কোপানো হলো.. এবার অভিজিত রায়কে!
ও.. বছরখানেক আগেই ফারাবীই অভিজিত রায়কে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ নিয়ে তিনি একটা নোট-ও লিখেছিলেন ফেসবুকে। প্রশ্ন হলো, ফারাবি কে? ফারাবি হলো সে ব্যাক্তি যে রাজীব হায়দারের জানাজার ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলো। যদিও ব্লাগোস্ফিয়ারে ফারাবীকে তারছেঁড়া পাগলই ভাবে অনেকে।
মিডিয়ার কথা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। লেখকের চেয়ে ব্লগার পরিচয় বড় করে দেখা নিয়ে। এই নিউজটা নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেইজ হাস্যকর একটা কাজ করে বসেছে। অভিজিত রায়ের মৃত্যুসংবাদের নিচে আমার এক সাবেক সহপাঠী ও বন্ধুর (যার নামও অভিজিত রায়) ছবি ছাপিয়ে দিয়েছে। (লিংকঃ http://on.fb.me/1wsxuL8 ) গরম গরম সংবাদ দিতে গিয়ে গুগলের সাহায্য নিয়ে এই অবস্থা। :3
এরপর আর কিছু বলার থাকে না!সব কথার শেষ কথা হলো, এই দেশে সবাই এক্সট্রিমিস্ট! সবাই বেশী বোঝে! এক্সট্রিমিস্টদের কর্মকান্ডের বিচার এদেশে হয় না, হোক সে পেট্রোল বোমাবাজ, হোক সে গুম-খুনরাজ আর হোক সে অন্য কিছু!
কবি হেলাল হাফিজের মতো করে বলি,
'নিউট্রন বোমা বোঝ
মানুষ বোঝ না!'
***
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
উত্তরা, ঢাকা।
আসলে মিডিয়া পাবলিককে খাওয়ানোও মতো করে নিউজ প্রেজেন্ট করে যাতে পাবলিক হেডলাইন পড়ার পর বাকীটা পড়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে নিউজের হেডলাইনে ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলাতে খুব সহজে বেশীর ভাগ পাঠকই ধরে নিবে লোকটা নাস্তিক হবে। অতএব, দুই-একটা নাস্তিক মারা দেশ ও জাতির জন্য সুসংবাদ।
গত দু'বছর হেফাজতের নিউজ করতে করতে মিডিয়া এখন ব্লগার মানেই নাস্তিক এমন একটা নেগেটিভ সেন্স তৈরী করে ফেলেছে (এর মানে আমি বলছি না অভিজিত রায় নাস্তিক ছিলেন না)। অনেকের কাছেই নাস্তিক হত্যা কতটুকু হালাল সেটা কেউ বোঝার দরকার পড়বে না। বরং ব্লগারদের গালাগাল করে একচোট দেখে নিবে। ব্যাপার এমন, একটা দুইটা নাস্তিক ধরো, ধইরা ধইরা জবাই করো!
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা বা ব্লগার পরিচয়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে যাবে অভিজিত রায়ের লেখক পরিচয়। মানুষ জানবে সে শুধু ধর্মের বিরুদ্ধে বিশেষত ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে লিখেছে। এ নিয়ে কাল থেকে বাঁশের কেল্লা বা রেডিও মুন্না টাইপের পেইজগুলো থেকে হয়তো প্রচার প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে নাস্তেক জালেম অভিজিত রায়কে নিয়ে। মানে বিজ্ঞান নিয়েও যে মানুষটা লিখতো সে হয়ে যাবে ১০০% দেশের শত্রু। অতএব হত্যাকারীরা বাহবা পাবে।
এক্সট্রিম লেভেলের যে কোন কিছুই খারাপ। মুক্তমনার মুখোশে ইসলাম ধর্ম বা অন্য ধর্মকে খোঁচা মেরে লেখা। আবার ধর্মান্ধ সেজে যাকে তাকে ধর্মের শত্রু বলে খতম করা। তাই বলে ভিন্ন মত সহ্য না করে একদম খতম করা, গুম করে দেয়া আসলে কোন সংস্কৃতি হতে পারে না।
আরেকটা জিনিস চোখে লাগলো যেটা হলো ফেব্রুয়ারীতেই এসব নাস্তিক বা নাস্তিকতার দায়ে অভিযুক্ত লোকগুলোকে টার্গেট করে হামলা করা হয়! দু বছর আগে ফেব্রুয়ারীতেই রাজীব হায়দারকে হত্যা করা হলো, ২০০৪-এর ২৭ ফেব্রুয়ারীতে হুমায়ন আজাদকে বইমেলা প্রাঙ্গনের বাইরে কোপানো হলো.. এবার অভিজিত রায়কে!
ও.. বছরখানেক আগেই ফারাবীই অভিজিত রায়কে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ নিয়ে তিনি একটা নোট-ও লিখেছিলেন ফেসবুকে। প্রশ্ন হলো, ফারাবি কে? ফারাবি হলো সে ব্যাক্তি যে রাজীব হায়দারের জানাজার ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলো। যদিও ব্লাগোস্ফিয়ারে ফারাবীকে তারছেঁড়া পাগলই ভাবে অনেকে।
মিডিয়ার কথা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। লেখকের চেয়ে ব্লগার পরিচয় বড় করে দেখা নিয়ে। এই নিউজটা নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেইজ হাস্যকর একটা কাজ করে বসেছে। অভিজিত রায়ের মৃত্যুসংবাদের নিচে আমার এক সাবেক সহপাঠী ও বন্ধুর (যার নামও অভিজিত রায়) ছবি ছাপিয়ে দিয়েছে। (লিংকঃ http://on.fb.me/1wsxuL8 ) গরম গরম সংবাদ দিতে গিয়ে গুগলের সাহায্য নিয়ে এই অবস্থা। :3
এরপর আর কিছু বলার থাকে না!সব কথার শেষ কথা হলো, এই দেশে সবাই এক্সট্রিমিস্ট! সবাই বেশী বোঝে! এক্সট্রিমিস্টদের কর্মকান্ডের বিচার এদেশে হয় না, হোক সে পেট্রোল বোমাবাজ, হোক সে গুম-খুনরাজ আর হোক সে অন্য কিছু!
কবি হেলাল হাফিজের মতো করে বলি,
'নিউট্রন বোমা বোঝ
মানুষ বোঝ না!'
***
২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
উত্তরা, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment