অন্যায়ভাবে একটা তরুণ প্রজন্মকে জোর করে ভিয়েতনাম যুদ্ধে পাঠাচ্ছিলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ষাট থেকে আশির দশকের সেই দিনগুলোতে আমেরিকা সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিলো তখনকার তরুণ প্রজন্মের অনেকেই। রক্তক্ষয় আর অন্ধকার রাজনীতির বিরুদ্ধে দাড়িয়ে যায় সানফ্রান্সিসকো ভিত্তিক প্রথাবিরোধী হিপ্পী আন্দোলন। সেখানেই যোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক বাংলাদেশী তরুণ। শান্তির স্বপক্ষে ঘরে-বাইরের এ যুদ্ধে তরুণটির স্বক্রিয় অংশগ্রহণের সময়ই পরিচয় আরেক আন্দোলনরত আমেরিকান মেলানির সাথে। পরিচয় থেকে পরিণয়। ঘটনাক্রমে পুলিশের ওয়ারেন্ট পেয়ে মেলানি পালিয়ে যাচ্ছিলো মেক্সিকো, সাথে সে বাঙ্গালী তরুণ। পুলিশের ঝড়-ঝঞ্চা পেরিয়ে দুজন যখন মেক্সিকো সীমান্তে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা, পরিণতি হয়ে অনৈচ্ছিক বিচ্ছেদে। অন্ধকার কুঠায় হারিয়ে যায় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো বছর।
তারপর ভাগ্য নিয়ে বাঙ্গালী তরুণের বাজি খেলা। অনেকবছর পর সেই বাঙ্গালী তরুণ যখন বৃদ্ধ হয়ে গেল, এই ঢাকা শহরেরই অভিজাত এলাকায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। নিশ্চিত ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্ককে বাঁচিয়ে নিজেই কোথায় যেন চলে গেলেন। তিনি কি খুঁজে পেয়েছেন তার হারিয়ে ফেলা এতগুলো বছর? ফিরে পেয়েছেন তার সেই ভীনদেশী প্রেমিকাকে? নাকি জীবন দিলেন অন্য কোন যুগলকে?
চমৎকার এ কাহিনী নিয়ে প্রখ্যাত গীতিকার ও কবি লতিফুল ইসলাম শিবলীর 'দারবিশ' উপন্যাসটা পড়তে পড়তে অনেক প্রশ্ন মাথায় আসে। যুদ্ধ, ভালবাসা, মমতা, সততা, বিশ্বাস, দেশপ্রেম - সব যেন এক মলাটেই বন্দী করেছেন। অন্য আট-দশটা কাহিনীর চেয়ে এখানে গল্পের মেসেজটাও তাই শিক্ষণীয়। ভাল লাগলো উপন্যাসটা।